পূর্ব আকাশে সূর্য উঠতে না উঠতেই সাভারের বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জমে ওঠে শ্রমজীবী মানুষের ভিড়। হাতে কাস্তে-কোদাল, চোখেমুখে অনিশ্চয়তা—তবুও আশায় বুক বেঁধে শতাধিক শ্রমিক হাজির হন শ্রমের হাটে। তবে শ্রম বিক্রি করতে এসে কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে অনেককেই।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার সিটি সেন্টারের সামনে দীর্ঘদিন ধরে বসছে এই অস্থায়ী শ্রমবাজার, যেখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ দিনমজুরি খোঁজে আসেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা নিম্নআয়ের মানুষ এখানে এসে দরদাম করে দিনমজুরির কাজ নিয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিকের সংখ্যা বেশি হলেও, কাজের সুযোগ কম, ফলে বিপাকে পড়েছেন শ্রমিকরা।
পঞ্চাশোর্ধ্ব নারী শ্রমিক শেফালী বেগম বলেন, “মাসে ১০-১৫ দিনের বেশি কাজ পাই না। চাল-তেল-পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে, কিন্তু আয় বাড়েনি। হাটে গেলে হাতে টাকাই থাকে না। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।”
শ্রমিক আকবর হোসেন বলেন, “এখানে শ্রমিক অনেক, কিন্তু কাজ দেয় কম লোক। অনেক কন্ট্রাক্টারের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমাদের কাজ নেই বললেই চলে।”
উলাইল এলাকার শ্রমিক শফিকুল ইসলাম জানান, “প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি, কেউ কাজে নিচ্ছে না। যারা আসে, তারা দর কষে অনেক কম টাকায় কাজ নিতে চায়। এভাবে চললে আমরা চলতে পারব না।”
এই সংকট নিয়ে ঢাকা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল আহসান রাশেদ বলেন, “শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের স্বাস্থ্যসেবা ও সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।” তিনি শ্রমিকদের জন্য আইনি সহায়তা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসও দেন।
এই শ্রমবাজারে এখনই নজর দেওয়া না হলে, দিন এনে দিন খাওয়া হাজারো মানুষ আরও গভীর সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।